মৃত্যুশয্যায় আলেকজান্ডার তাঁর সেনাপতিদের ডেকে বলেছিলেন, ‘আমার মৃত্যুর পর আমার তিনটা ইচ্ছা তোমরা পূরণ করবে।
আমার প্রথম অভিপ্রায়, “শুধু আমার চিকিৎসকেরা আমার কফিন বহন করবেন।
আমার দ্বিতীয় অভিপ্রায়, “আমার কফিন যে পথ দিয়ে গোরস্থানে নিয়ে যাওয়া হবে, সেই পথে আমার কোষাগারে সংরক্ষিত সোনা, রুপা ও অন্যান্য মূল্যবান পাথর ছড়িয়ে দিতে হবে।”
আমার শেষ অভিপ্রায়, “আমার কফিন বহনের সময় আমার দুই হাত কফিনের বাইরে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।”

তাঁর মৃত্যুশয্যায় উপস্থিত লোকজন মহাবীর আলেকজান্ডারের এই অদ্ভুত অভিপ্রায়ে বিস্মিত হন। কিন্তু এ ব্যাপারে তাঁকে কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস পাচ্ছিলেন না কেউ। তখন তাঁর একজন প্রিয় সেনাপতি তাঁর হাতটা তুলে ধরে চুম্বন করে বলেন, ‘হে মহামান্য, অবশ্যই আপনার সব অভিপ্রায় পূর্ণ করা হবে; কিন্তু আপনি কেন এই বিচিত্র অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন?’
, ‘আমি দুনিয়ার সামনে তিনটি শিক্ষা রেখে যেতে চাই। আমার চিকিৎসকদের কফিন বহন করতে বলেছি এ কারণে যে, যাতে লোকে অনুধাবন করতে পারে চিকিৎসকেরা আসলে কোনো মানুষকে সারিয়ে তুলতে পারেন না। তাঁরা ক্ষমতাহীন আর মৃত্যুর থাবা থেকে কাউকে রক্ষা করতে অক্ষম।
‘গোরস্থানের পথে সোনা-দানা ছড়িয়ে রাখতে বলেছি মানুষকে এটা বোঝাতে যে ওই সোনা-দানার একটা কণাও আমার সঙ্গে যাবে না। আমি এগুলো পাওয়ার জন্য সারাটা জীবন ব্যয় করেছি, কিন্তু নিজের সঙ্গে কিছুই নিয়ে যেতে পারছি না। মানুষ বুঝুক’ ধন-সম্পদের পেছনে ছোটা সময়ের অপচয় মাত্র।
কফিনের বাইরে আমার হাত ছড়িয়ে রাখতে বলেছি মানুষকে এটা জানাতে যে খালি হাতে আমি এই পৃথিবীতে এসেছিলাম, আবার খালি হাতেই পৃথিবী থেকে চলে যাচ্ছি।